আমিরুল ইসলাম জীবন
ইহুদি-নাকি খ্রিস্টান, হিন্দু-মুসলমান,
এই পরিচয়ে ভুলে যায় মানবতা-কথার ধ্বনিমান।
খলিল মাহমুদ এক ফিলিস্তিনি ছায়া,
স্বপ্ন দেখে শান্তির, স্বপ্ন দেখে মায়া।
শিক্ষা আন্দোলনে জ্বলেছিলো তার মুখ,
ইসরাইলের জেদে সে ছিলো এক দুঃখ।
শরণার্থী হয়ে পাড়ি দিলো দূর আমেরিকায়,
ভালোবাসলো এক তরুণী, হৃদয় যার বিকায়।
গর্ভে তার স্ত্রীর জীবন নতুন দোলা দেয়,
ট্রাম্পের আদেশে বন্দি, মানবতা কাঁদে তাই।
কিন্তু, ওহ, দাঁড়ালো কারা? অবাক করা দৃশ্য,
ইহুদি ছাত্ররা বলল, ‘এ বিচার নয় শুদ্ধ’।
নিউ ইয়র্ক শহরে গর্জে উঠল কণ্ঠস্বর,
‘খলিলের জন্য ন্যায় চাই’, ভেসে উঠল দরদঘর।
৯৪ জন গ্রেফতার, তবু তারা চুপ নয়,
মানুষের অধিকারে নেই জাত-ধর্মের ভয়।
জানো তো, এদিকে মুসলমান কিছু ভাই,
বন্ধুত্বের আড়ালে রাখে শত্রুতার গাই।
হাদিস বলে—‘পাথরও বলবে, ইহুদি আছে ওখানে’,
এ কেমন ধর্ম, কোথায় মানবতার খানে?
হামাস বলে—‘মানুষ নয়, কেবল মুসলমান’,
তাই নাকি উম কিপুরে চলল রক্তদান?
বারশো ইহুদি মারা, আর ২৫০ জন ধরা,
ফিরে এলো যুদ্ধে ৫০,০০০ মৃতের নড়া।
ইহুদি থামল জিম্মি ছাড়লেই, করল না উল্লাস,
ফিলিস্তিনের রাস্তায় বাজল বিজয়ের বাঁশ।
সন্তান জন্ম দেয় তারা—হামাসে পাঠাবে বলি?
এ কেমন জীবন, যুদ্ধ ছাড়া কিছুই খুলি?
ইচ্ছা করলে গাজা করতে পারত শূন্য,
তবু করেনি—কারণ শক্তিরও থাকে বুদ্ধি সংযম।
ইহুদিরা জানে—আল্লাহ নয়, মগজ-মন,
যার কাজে লাগায় সে-ই তো পরাক্রমশালী জন।
হায়রে মুসলিম, অন্ধ ভরসার নাম,
চেষ্টা ছাড়া ঈশ্বরও দেন না পুরস্কার-ধাম।
যদি এতই চাই বিধর্মীহীন ধরা,
তবে কেন ঈশ্বর দেন সবারে, কেন সে সাড়া?
আহা, যদি সত্যি হতো ঈশ্বরের বিধান,
ছয়শো কোটি মানুষ বাঁচতো না একটান।
তাই বলি—মানুষ হ, ধর্ম নয় মুখ্য,
ভালোবাসা দাও সবারে, তবেই হবে শুভক।
ইহুদি ছাত্রেরা যেভাবে দেখালো পথ,
তুমি-আমি কেন নয় সেই মহত প্রাণের রথ?
মানুষের জন্য মানুষ—এই তো মূল সুর,
এই বিশ্বাসেই হোক গড়া নতুন ভবিষ্যত-দূর।