নেত্রকোণা জেলা প্রতিনিধি :
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে তিন কলেজ অধ্যক্ষের নিয়োগকালীন সময়ে কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা, অবৈধ নিয়োগ, সনদ জালিয়াতি, ভূয়া সনদের ব্যবহার অর্থ-আত্মসাৎসহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন দুর্গাপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ তালুকদার, একই কলেজের ইসলাম শিক্ষা বিষয়ে কর্মরত সহকারী অধ্যাপক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ এবং আলহাজ্ব মাফিজ উদ্দিন তালুকদার কলেজের অধ্যক্ষ মোছাঃ কামরুন্নাহার।
২০২৪ সালের ১০ নভেম্বর ‘সুসং দুর্গাপুর দুর্নীতি ও নিপীড়ন বিরোধী ভার্সিটিয়ান মঞ্চ’ নামের একটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংগঠন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিলে বিষয়টি তদন্তে নেওয়া হয়। তদন্তের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসার নিপা বিশ্বাসকে আহ্বায়ক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফজলুর রহমানকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, ফারুক আহমেদ তালুকদার সুসং মহাবিদ্যালয়ে ২০০৩ সাল থেকে প্রভাষক পদে কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা, অবৈধ নিয়োগ, তার স্ত্রী মোছাঃ কামরুন্নাহারকে নিবন্ধন সনদ জালিয়াতি করে প্রভাষক বানিয়ে আলহাজ্ব মাফিজ উদ্দিন তালুকদার কলেজের অধ্যক্ষ পদে বসানো, দুর্গাপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও বর্তমানে ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল আজিজের ভূয়া সনদের চাকুরিতে যোগদানসহ বেশ কিছুর দুর্নীতির প্রমাণ মেলেছে। অভিযুক্তদের নানা তালবাহানা ও তাদের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনৈতিক হস্তক্ষেপের ফলে কিছুটা দেরি হলেও চারমাস পর গত মার্চে উপজেলা প্রশাসনের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন বলে তদন্ত কমিটি।
সূত্র জানায়, অভিযুক্তদের নানা তালবাহানা ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক-প্রশাসনিক নেটওয়ার্কের কারণে তদন্ত সম্পন্নে সময়ক্ষেপণ হয়। এরপরও চার মাস পর, চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রতিবেদনটি উপজেলা প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাভিদ রেজওয়ানুল কবীর বলেন, “তদন্ত প্রতিবেদনটি জেলা প্রশাসকের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে তা পাঠাবেন।”
নেত্রকোনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শামীমা ইয়াসমিন বলেন, “এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা তদন্ত প্রতিবেদনটি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। ”
এদিকে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি ও অনিয়মে ক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।