আলমগীর হোসেন
মা—সে তো এক ভালোবাসার নাম, এক রক্ষাকবচ, যিনি সন্তানের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেন। আমার জীবনেও মা ছিলেন তেমনই এক মহীয়সী নারী। যখন মিথ্যা মামলায় আমাকে কারাগারে যেতে হয়েছিল, তখন তিনিই ছিলেন আমার শেষ আশ্রয়। কিন্তু আজ, সেই মমতাময়ী মা আর নেই। আড়াই বছর আগে এই দিনে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আমরা হারিয়েছি তাকে, কিন্তু তার স্নেহ ও ভালোবাসা আজও আমাকে বেঁচে থাকার শক্তি জোগায়।
আমার মায়ের লড়াই ও আত্মত্যাগ:
আমার মা শুধু আমাদের সংসারের আলো ছিলেন না, তিনি ছিলেন আমার জীবনের সবচেয়ে বড় যুদ্ধের সঙ্গী। যখন শত্রুপক্ষ আমাকে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছিল, তখন তিনি নিরলস পরিশ্রম করে, সমাজের সামনে সত্য তুলে ধরে আমাকে মুক্ত করেছিলেন।
তিনি একাই লড়েছেন আমার মুক্তির জন্য।
প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন, প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন।
তার বিশ্বাস ও ভালোবাসার কারণেই আমি মুক্ত হতে পেরেছিলাম।
কিন্তু বিধির বিধান, সেই মায়ের ছায়া আজ আর আমার মাথার ওপর নেই।
সেই কালো দিন: মায়ের অকাল বিদায়
আড়াই বছর আগে, এই দিনে কোনাবাড়ী, কলেজ গেট,আঞ্জুমান, পাম্পের সামনে আমাদের নিজ বাড়িতে যাওয়ার পথে আজমিরী বাস এসে ধাক্কা দেয় সেই সড়ক দুর্ঘটনায় তাকে হারাই। যে মা একসময় আমাকে সমস্ত অন্ধকার থেকে রক্ষা করেছিলেন, তাকেই আমি বাঁচাতে পারলাম না। উত্তরা শিন শিন জাপান হসপিটাল এর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যু আমার জীবনে এক শূন্যতা তৈরি করেছে, যা কখনোই পূরণ হবে না।
আমার অনুভূতি ও সমাজের জন্য বার্তা:
আজ যখন মায়ের কথা ভাবি, তখন বুঝি, মা কেবল একজন মানুষ নন, তিনি আমাদের জীবনের রক্ষাকবচ। আমি আজও মায়ের সেই সংগ্রাম থেকে অনুপ্রেরণা পাই। আমার মতো যেন আর কোনো সন্তান মাকে হারিয়ে একা না হয়ে যায়, তাই আমি সমাজের কাছে অনুরোধ করছি—
মিথ্যা মামলা ও ষড়যন্ত্র থেকে নিরপরাধ মানুষকে রক্ষা করুন।
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আরও কঠোর আইন ও সচেতনতা বৃদ্ধি করুন।
মায়ের ভালোবাসাকে সম্মান করুন, যতদিন তারা আমাদের পাশে আছেন।
“মা, তুমি আজ নেই, কিন্তু তোমার ভালোবাসা, তোমার লড়াই আমাকে বেঁচে থাকার শক্তি দেয়। তুমি আমার রক্ষাকবচ ছিলে, চিরকাল থাকবেও।”