যোষেফ হাজরা
সেই সকল ধ্বংসস্তুপ আমিও দেখেছি,
দেখেনি সুপ্রতিষ্ঠিত সভ্যতা মহাকালে বিলিন হয়ে যেতে।
মিশর থেকে মায়া সভ্যতা, প্রাচীন গ্রীক থেকে ব্যাবিলিয়ন
সকলেই ঝরে গিয়েছে নক্ষত্র পতনের মত।
তেমনি যারা চায় না কোন নক্ষত্র হতে,
ক্ষণজন্ম জীবন যাদের ডেফোডিলের মত।
হেসে খেলে ফুটে থাকে প্রভাতের আলোকে,
পাহাড়ি ঝর্ণার পাদদেশে
অলক্ষ্যে ঝরে পড়ে সন্ধার বাতাসে।
কী আছে জীবনে আর!
দেখতে দেখতে কেটে যায় তার আয়ুকাল।
না হয় বার বার জন্ম নিবে ওরা,
তৃণলতা, ঘাসফুল, প্রজাপতির মতো
দেখে যায় পৃথিবী কেমন আছে।
কেমন আছে আদিম বাসভূমি?
আবার কী ফিরে আসা যাবে এখানে?
নাকি পৃথিবী হয়ে যাবে দূষণের গ্রাস।
ওরা তো কোন দানব ইমরাত হতে চায় নি
চায় নি হতে পুঁজিবাদের প্লাস্টিক দূষণ,
বিষাক্ত কার্বনের সেই সুনাম নেই ওদের বিন্দুমাত্র
ওরা নির্মল, সহিষ্ণু ও নামহীন
ধিকধিক করে অন্তরে গ্রহণ করে কার্বন-ডাই-অক্সাইড।
ওরা হেরে গিয়েছে,
আর আমরা জিতে গিয়েও হেরে যাচ্ছি।
আমরা হেরে যাচ্ছি কারন আমাদের গ্রহ,
আমাদের সুখ-স্বচ্ছতা মিটাতে গিয়ে ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত,
আমাদের গ্রহ এখন জ্বরা-জীর্ণ বৃদ্ধ পিতা।
আমাদের সাধ আমরা যেন নক্ষত্রের মত উজ্জ্বল হয়ে উঠি
আমাদের পিতা পারেনি সে আবদার রাখতে।
বরং ছেলে ভোলানোর শৈশব দিয়ে
পরম লালিত্যে ধরে রাখতে চেয়েছিল।
পারেনি।
পারেনি আমাদের অতিকায় স্বপ্ন পূরণ করতে।
নক্ষত্র বাহিনীর কাছে পরাজিত আমাদের গ্রহ
বৃদ্ধা পিতার মত মুখ থুবড়ে পড়ে আছে।
তাকে ফিরিয়ে দেও তার বিশুদ্ধ বাতাস
বিশুদ্ধ মাটি, বিশুদ্ধ জল,
নিবিড় বনে ছুটে চলা হরিণের দল।
না হলে আমাদের হারাতে হবে অবশিষ্ট ছায়াটুকু।
আমাদের হারাতে দিও না।
পৃথিবীকে শাসন করা হে নক্ষত্ররা,
তোমার আমার পতনের শেষ মুহূর্ত আগে
পৃথিবীকে জ্বালানি করার অন্তিম আয়োজন বন্ধ কর।
বন্ধ করে দিয়ে সব ধ্বংসের দামামা
বন্ধ কর।