• শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ১২:৩৯ পূর্বাহ্ন

বিজয়ের ৫৪ বছর পর

কবি ও সাংবাদিক মোঃ মশিউর রহমান / ৮১ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫

 

১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর আমরা বাঙালি জাতি তথা বাংলাদেশ মৌখিক এবং সার্বভৌমত্বগত দিক দিয়ে বিজয় লাভ করেছি। যে বিজয় ছিল ভাষার পক্ষে, অত্যাচারির বিরুদ্ধে। আপামর বাঙালির যুদ্ধে সংগ্রাম করার যে স্পৃহা; সে স্পৃহা একদিনে তৈরি হয়নি। দীর্ঘদিনের লাঞ্ছনা, বঞ্চনা, বাঙালির প্রতি অত্যাচার, স্বৈরাচারী মনোভাবই পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ জন্মের লক্ষমাত্রা তৈরিতে মূল ভূমিকা পালন করেছে।
বলে রাখা ভালো, শুধু এই কারণেই ১৯৭১ সালে যুদ্ধ সংঘটিত হয়নি। যুদ্ধের পেছনে আরো একটি কারণ ছিল যা বৈষম্য, পশ্চিম পাকিস্তানের চেয়ে পূর্ব পাকিস্তানে দ্রব্যপণ্যের দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। যখন বাংলাদেশ পাকিস্তানের অংশ ছিল তখন পাকিস্তানের নাম ছিল পশ্চিম পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের নাম পূর্ব পাকিস্তান। তখন পশ্চিম পাকিস্তানে চালের কেজি ২০ টাকা হলে, পূর্ব পাকিস্তানে ২৫ টাকা কেজি ছিল এবং গম পশ্চিম পাকিস্তানে ২৫ টাকা হলে, পূর্ব পাকিস্তানে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হতো। এছাড়াও তখন অন্যন্য পণ্যদ্রব্য পশ্চিম পাকিস্তানের চেয়ে পূর্ব পাকিস্তানে বেশি দামে বিক্রি করা হতো, যা চরম বৈষম্য! শুধু বৈষম্যই না, শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানের জনগনের প্রতি অত্যাচার,নিপীড়নসহ নানা ধরনের অর্থনৈতিক বোঝা চাপিয়ে দিত।
সে সময় ভূখণ্ড দ্বি-খন্ডিত হওয়ার জন্য যতগুলো কারণ ছিল তা হলো আপামর বাঙালির প্রাণের দাবি। সে প্রাণের দাবি মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জনের মাধ্যমে অর্জিত হয়। আর আজকের বাংলাদেশ! সুজলা-সুফলা সোনার বাংলাদেশ। বাংলাদেশ আজ খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ন্ন। তবে অত্যন্ত দূঃখের বিষয়, আজকে রাষ্ট্র কর্তৃক ঋণের বোঝা যতটুকু জনগন পরিশোধ করছে, তারচেয়ে বেশি অর্থ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতেই ব্যয় হচ্ছে। অর্থাৎ রাষ্ট্রের ঋণের বোঝাতো জনগনের পরিশোধ করতেই হচ্ছে পাশাপাশি প্রয়োজনীয় খাদ্য-দ্রব্য কিংবা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করতেও অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। সুজলা-সুফলা সোনার বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও দেশে সবসময় কৃত্রিম সংকট কিংবা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। মূলত এই সংকট তৈরি করছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। তারা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দ্রব্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ জনতা পাকিস্তানি স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার যে অন্যতম কারণ ছিল খাদ্য পণ্যের দাম বৃদ্ধিকরণ, তা স্বাধীন বাংলাদেশেও যেঁকে বসেছে কিছু অসাধু ও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীর কারণে। যা নৈতিক মূল্যবোধের চরম পরিপন্থী হওয়ার পাশাপাশি তারা দেশ ও জনগনের সাথে বেইমানি করছে। বর্তমান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বাজার নিয়ন্ত্রণে। এখনই যদি তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, তাহলে অচিরেই আমাদের বাজারের কৃত্রিম সংকট বেড়ে যাবে এবং দ্রব্যপণ্যের উর্ধ্বগতি উর্ধ্ব থেকে উর্ধ্বতর হবে। এতে করে দেশের জনগণ সরকারের প্রতি বিশ্বাস হাড়িয়ে ফেলবে।
আমাদের দেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ যে যে কারণগুলো সামনে নিয়ে সংঘটিত হয়েছিল সে কারণগুলো যদি ঠেকাতে আজও সরকার ব্যর্থ হয় তাহলে জনগণের আরও বলার স্থান নেই। জনগন চায় দেশে শান্তি থাকুক, সম্পৃতি থাকুক, এবং দেশের সকল মানুষের ক্ষুধার কষ্ট না থাকুক। সাধারণত মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তদের সরকারের প্রতি এতোটুকুই চাওয়া। এতেই দেশের মূল বিজয় নিহিত।

শিমুল হোসাইন
শিক্ষার্থী, মির্জা গোলাম হাফিজ ডিগ্রি কলেজ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
January 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  

Archive Calendar

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১৩১৫১৬১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭৩০৩১