• বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৯ অপরাহ্ন

মহানবী (সা.)-এর জীবনী পড়ে মুসলিম হওয়া এক ব্রিটিশ যুবকের গল্প

Reporter Name / ১৯ Time View
Update : শুক্রবার, ১২ জুন, ২০২০

তার নাম ইউসুফ ডার্বিশায়ার, যুক্তরাজ্যের অধিবাসী। ইসলাম গ্রহণের আগে তিনি ছিলেন মদ-মাস্তিতে মগ্ন এক ব্রিটিশ যুবক। কিন্তু এর মাঝেই তিনি পড়তে শুরু করেন মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী।

অবসর সময়ে তিনি মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী পড়তেন। এভাবে মহানবী (সা.) এর জীবনী পড়তে পড়তে ইসলামের প্রতি তার আগ্রহ তৈরি হয়। এক সময় ইসলাম গ্রহণ করেন।

মহানবী (সা.)-এর চাচা হামজা (রা.)-এর জীবন তাকে দারুণভাবে প্রভাবিত করে। ফলে তার বোনের নামের সঙ্গে মিলিয়ে নিজের মেয়ের নাম রাখেন সাফিয়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউবে প্রচারিত ইউসুফ ডার্বিশায়ারের ইসলাম গ্রহণ বিষয়ক সাক্ষাৎকারের লেখ্যরূপ তুলে ধরা হল:-
মুসলিম হওয়ার আগে আমি ছিলাম একজন সাধারণ ব্রিটিশ বালক। আমি রবিবার সন্ধ্যায় মদপানসহ এমন সব কিছুতেই অভ্যস্ত ছিলাম। পাঁচ বছর আগে আমি ছুটি কাটাতে গ্রিসে যাচ্ছিলাম। আপনি যখন কোনও এয়ারপোর্টে যাবেন আপনার ব্যাকপ্যাকে পড়ার মতো একাধিক বই থাকতে পারে—যা আপনি কোনও সুইমিংপুলের পাশে বসে পড়তে পারেন। যদিও খুব বেশি পড়া হয় না। আমি ভাবলাম, ডাব্লিউএইচ স্মিথের কোনও বই পড়ার জন্য নিয়ে যাব। কিন্তু মনের মতো কোনও বই পেলাম না।

মহানবী (সা.)-এর জীবনী পড়ে মুসলিম হই

কখনও কখনও মানুষ না চাইতেও অনেক ভালো কিছু পেয়ে যায়। বই না পেয়ে ফিরে আসার সময় আমার হাতে লেগে একটি বুক শেলফ পড়ে যায়। বইগুলো তোলার সময় তার একটি বই আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বার্নাবি রজার্সনের ‘দ্য প্রফেট মুহাম্মদ : আ বায়োগ্রাফি’। লাইব্রেরিতে বইটির প্রথম পৃষ্ঠা পড়ার পরই আমার ভালো লেগে যায়। আমি দ্বিতীয় পৃষ্ঠা পড়ি এবং ছুটিতে পড়ার জন্য বইটি কিনে নিই। আমি বইটি পড়লাম। আমার মনে হল, আমার আরও জানা প্রয়োজন। সুতরাং আমি স্থানীয় একটি মসজিদে গেলাম, তাদের সঙ্গে কথা বললাম এবং জানার আগ্রহ প্রকাশ করলাম। মসজিদের ইমাম বললেন, ‘সত্যি বলতে কি ইসলাম বোঝার শ্রেষ্ঠ পথ হল মুসলিম হওয়া।’ তখন আমি দ্বিতীয় কোনও চিন্তা না করেই ‘শাহাদাত’ পাঠ করলাম।

হামজা (রা.)-এর জন্য ভালোবাসা

একজন নওমুসলিম হিসেবে মহানবী (সা.)-এর সাহাবিদের সঙ্গে নিজের মিল খোঁজা স্বাভাবিক। কেননা তারাও ছিলেন ‘ধর্মান্তরিত মুসলিম’। আমার মনে হয়, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চাচা হামজা (রা.)-এর সঙ্গে আমার মিল রয়েছে। ইসলাম গ্রহণের আগে ও পরে তার জীবনাচারের সঙ্গে আমি নিজের মিল খুঁজে পাই। যেমন তিনি আনন্দময় সময় কাটাতে পছন্দ করতেন—এমন অনেক কিছুই মনে হয় মিলে যায়। সুতরাং হজের সময় আমি উহুদ যুদ্ধের প্রান্তরে—যেখানে হামজা (রা.) শহীদ হয়েছিলেন সেখানে যাই এবং সময় কাটাই। উহুদের প্রান্তরে আমি যখন হাঁটছিলাম, যেন প্রশান্তির ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমি আবেগাপ্লুত হয়ে কাঁদছিলাম। কিছুতেই কান্না থামাতে পারছিলাম না। আমি হাঁটতে হাঁটতে সামান্য উঁচু করে দেওয়া কবরস্থানের প্রাচীরের কাছে পৌঁছে গেলাম এবং হামজা (রা.)-সহ উহুদের শহীদদের জন্য দোয়া করলাম। কাঁদতে কাঁদতে বাসে ফিরে এলাম।

একজন জানতে চাইলেন কী হয়েছে? আমি বললাম, এখানে এমন একজন ছিলেন যার ভেতর আমি আমার প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাই। তিনি বললেন, ‘মুহাম্মদ (সা.) যখন জানতে পারলেন তার চাচার সঙ্গে কী হয়েছে—তিনি কেঁদে দিলেন এবং অবিরাম তার অশ্রু ঝরছিল।’ আমি বললাম, তিনি হয়তো পরবর্তীদের জন্য কিছু রেখে গেছেন!


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
June 2020
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  

Archive Calendar

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০