• শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫৭ পূর্বাহ্ন

ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

Reporter Name / ২৪ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১১ জুন, ২০২০

নীতিমালার তোয়াক্কা না করে নওগাঁয় ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। জমির ওপরের অংশ অর্থাৎ টপ সয়েল ইটভাটায় যাওয়ায় জমির উর্বরতা হারাচ্ছে। এতে করে খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ। দ্রুত ইটভাটার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে আগামীতে খাদ্য ঘাটতিসহ ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করছেন সচেতনরা।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলার ১১টি উপজেলায় প্রায় ১৭০টি ইটভাটা আছে। যার অধিকাংশেরই পরিবেশ অধিদফতরের কোনো ছাড়পত্র নাই।

ইট তৈরির প্রধান কাঁচামাল মাটি। ফসলি জমির মাটি ইট তৈরিতেও সুবিধা। এছাড়া হাতের নাগালে হওয়ায় কৃষকদের বিভিন্ন ভাবে বুঝিয়ে এ মাটি কিনে নেয় একটি পক্ষ। এরপর তারা বেশি দামে ইটভাটায় সরবরাহ করে থাকেন।

মাটি বিক্রি করায় ফসলি জমির উপরিভাগের মাটিতে যে জিপসাম বা দস্তা থাকে তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া মাটিতে যে জীবানু থাকে এবং অনুজীবের কার্যাবলি আছে তা সীমিত হয়ে যাচ্ছে। এতে করে দিন দিন ফসলি জমিতে উৎপাদন ক্ষমতা কমছে। মাটির জৈব শক্তি কমে গিয়ে দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতির মুখে পড়বে। আর এভাবে ফসলি জমির মাটি ইট ভাটায় যেতে থাকলে আস্তে আস্তে ফসল উৎপাদন ব্যহত হবে।

সদর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক দুলাল হোসেন ও সোহেল বলেন, মূলত ফসলি জমির উপরের অংশের মাটি ইটভাটায় বিক্রি করা হয়ে থাকে। এতে করে দেড় থেকে দুই বছর ওই জমিতে তেমন ফসল উৎপাদন হয় না। তবে প্রচুর পরিমাণ জৈব্য সার, খৈল, জিপসাম, ফসফেট ও পটাসসহ বিভিন্ন সার ব্যবহার করা হলে আগের মতো আবাদ হয়ে থাকে।

বদলগাছী উপজেলার আড়চা গ্রামের কৃষক বিজয় কুমার বলেন, তার জমি একটু উঁচু হওয়ায় সবজির আবাদ ভালো হতো। তবে ধানের আবাদ করার জন্য আড়াইবিঘা জমির মাটি ইটভাটাতে প্রায় ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। জমির উপরিভাগের মাটি বিক্রি করায় জমির কী ধরনের ক্ষতি হবে তা তিনি জানেন না।

নওগাঁ সদর উপজেলার মেসার্স এবিসি বিক্সস’র মালিক আবুল কালাম আজাদ বলেন, নদী ও পরিত্যাক্ত স্থানের মাটি ইটভাটায় ব্যবহার করা হয়। তবে নদীর মাটিতে বালুর পরিমাণ বেশি থাকায় ইট ভালো হয় না। নদীর মাটির সঙ্গে সামান্য পরিমাণ ফসলি জমির মাটি মিশিয়ে ইট তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মনোজিত কুমার মল্লিক বলেন, এভাবে ফসলি জমির মাটি ইটভাটায় যেতে থাকলে আস্তে আস্তে ফসল উৎপাদন ব্যহত হবে। কমপক্ষে ২/৩ বছর ওই জমি থেকে ভালো ফলন আশা করা যায় না। এতে করে আগামীতে খাদ্য ঘাটতির সম্ভবনা রয়েছে।

নওগাঁ জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ইট ভাটাগুলোতে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া ফসলি জমি থেকে ইটভাটায় মাটি না নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতনতা বাড়ানো হবে। একটা সময় হয়ত এ সমস্যা থেকে আমরা পরিত্রাণ পাব।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
June 2020
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  

Archive Calendar

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০